স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন
আমরা কিন্তু প্রত্যেকেই জানি যে রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন যে রাজ্যের পড়ুয়াদের দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা করে লোন পড়াশোনার জন্য সে ক্ষেত্রে যারা দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে সেই ক্লাস থেকে শুরু করে প্রত্যেক পড়ুয়াদের কিন্তু দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা।স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য অর্থাৎ যে আদৌ কত টাকা লোন পাওয়া যাবে, কত শতাংশ সুদ দিতে হবে, পাশাপাশি কি কি শর্ত রয়েছে, আবেদন করার পদ্ধতি সমস্ত বিষয় আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে জানানো হলো।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পাওয়ার জন্য সমপূর্ণ পোস্ট ভালো করে পড়বেন আশা করি সমস্ত রকম প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই পোস্টের মাধ্যমে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন করুন
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের নোটিফিকেশন ডাউনলোড করুন
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের অফিশিয়াল নোটিফিকেশন পাবলিস্ট হয়ে গেছে বিকাশ ভবন থেকে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে চলেছেন স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প।
কারণ আমরা একটি বিষয় থেকে অবগত যে ব্যাংকে থেকে যদি এডুকেশন লোন নেওয়া হয় তাহলে কত সমস্যা এবং ঘোরাঘুরি করতে হয় সেক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এডুকেশন লোন নেওয়া অনেকটা সুবিধা।এই লোনের ক্ষেত্রে আরেকটা সুবিধা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজস্ব হবে ছাত্রদের গ্যারান্টার অর্থাৎ কোন গ্যারান্টার প্রয়োজন নেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজের দায়িত্বে ছাত্রছাত্রীদেরকে লোন দেবে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রেস কনফারেন্সে অনুযায়ী।স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নেওয়া লোনের ওপর ন্যূনতম সুদ অর্থাৎ মাত্র ৪% সুদের হারে লোন দেওয়া হবে এবং সর্বোচ্চ লোন দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা।
একেবারেই কিন্তু সবাইকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়া হবে না শিক্ষার্থী যেই শ্রেণীতে এবং যে কোর্সে পঠন-পাঠনরত সেই শ্রেণী এবং কোর্স অনুযায়ী তোমাদের লোন স্যাংশন করা হবে। যেমন বি.এড এর ক্ষেত্রে কয়েকটা কলেজে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয় তাহলে সেই অনুযায়ী টাকা লোন পাবে আবার সরকারি কলেজে বি.এড করলে সেই কলেজের কোর্সের খরচ অনুযায়ী লোন পাওয়া যাবে।আবার অনেক শিক্ষার্থী যারা নার্সিং কোর্স করছে বা আগামীদিনে করবে তাদের সেই কোর্সের ফি অনুযায়ী লোন স্যাংশন হবে আবার অনেকে এমবিবিএস করছে ক্ষেত্রে যেহেতু বেশি টাকা খরচ হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে হয়তো সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা লোন পাওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ তুমি কোন কোর্স করছো সেই কোর্স এর উপর ভিত্তি করেই ডিসাইড হবে যে তুমি কত টাকা পাবে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া ও ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার প্রত্যকটি ধাপ
- সর্বপ্রথম ছাত্রছাত্রীদের "অনলাইন" আবেদন করতে হবে।
- অনলাইন আবেদন করার পর সেই আবেদনটি প্রত্যেকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে যাবে।
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের "নোডাল অফিসার" দ্বারা যাচাই করে দ্বারা আবেদনকারীর সমস্ত নথি উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠানো হবে।
- উচ্চশিক্ষা দপ্তরের যাচাই এর পর সেটি আবেদনকারীর নথিতে উল্লেখিত ব্যাঙ্কে পাঠানো হবে।
- ব্যাঙ্ক থেকে যাচাই করার পর স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড জারি করা হবে।
স্টুডেন্টদের এই ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার উদ্দেশ্যে
- পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত শিক্ষার্থী যাতে পড়াশোনার খরচ সংক্রান্ত কোনো রকম চিন্তা না করে যাতে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সেইজন্য পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষার্থীদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং বাইরে পড়াশোনা করার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকার লোন নূন্যতম সরল সুদে প্রদান করবে।
- স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা
- ঝামেলা মুক্ত এবং কোনো রকম অঙ্গীকার বা বিনিয়োগ না দিয়েই লোন পাওয়া যাবে।
- সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যাবে।
- মাত্র ৪% সরল সুদের হারে লোন পাওয়া যাবে।
- পড়াশোনা বা কোর্স চলাকালীন যদি সুদের পরিমাণ শোধ হয়ে যায় তাহলে আরও ১% ছাড় পাওয়া যাবে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড থেকে পাওয়া লোনের টাকা কী কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
- কলেজ ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষা পঠন-পাঠন রত শিক্ষার্থীদের টিউশান ফি, এক্সামিনেশনস ফি, লাইব্রেরীর ফি, কোর্স ফি এই সমস্ত খরচে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিল দ্বারা সমর্থিত সাবধানতা আমানত/বিল্ডিং তহবিল/ফেরতযোগ্য ডিপোজিটের জন্য ফি-র জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাবদ অন্যান্য খরচ
- কলেজ/ইউনিভার্সিটি/ উচ্চশিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হোস্টেলে থাকলে সেখানকার ফি
- কলেজ/ইউনিভার্সিটি/ উচ্চশিক্ষা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে যদি কোনো শিক্ষার্থী পঠনপাঠনের জন্য কোথাও ভাড়াটে হিসেবে থাকলে সেখানকার ফি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
- খাতা বই কম্পিউটার ল্যাপটপ ট্যাবলেট কেনার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
- শিক্ষামূলক ভ্রমণ এবং কোনো কোর্সের প্রজেক্ট এর কাজের জন্য যে সমস্ত যাবতীয় জিনিস ব্যবহার করা হয় সেখানে এই টাকা ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:কোর্স ভিত্তিক অনুযায়ী যে পরিমাণ টাকার লোন পাওয়া যাবে সেটির ৩০% খরচ করতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্যান্য খরচ হিসেবে এবং ২০% খরচ করা যাবে হোস্টেল/মেস/ভাড়া হিসেবে শুধুমাত্র কোর্স চলাকালীন।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড আবেদন করার যোগ্যতা
- শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। শিক্ষার্থীর পরিবার নূন্যতম ১০ বছরের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের অব্যশই অধ্যয়নের জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে দশম/উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে/ স্নাতক ডিগ্রী/স্নাতকোত্তর ডিগ্রীতে এবং পেশাদার এবং ডিপ্লোমা কোর্সে সেটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অভ্যন্তরে বা বাইরে এমনকি দেশের বাইরে হলেও লোন পাওয়া যাবে। আবার ইউপিএসসি/পিএসসি/এসএসসি মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য কোচিং ইনস্টিটিউটগুলিতে শিক্ষার্থীদের নিজেদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে।
- কোনো শিক্ষার্থীর বয়স ৪০ বছরের অধিক হলে সেটি গ্রাহ্য হবে না।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের অর্থ এবং সুরক্ষা পরিমাণ
- সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যাবে।
- শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা/ কোর্স চলাকালীন যেকোনো সময় লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে ।
- শিক্ষার্থীরা যখন লোনের জন্য আবেদন করবে তাদের সাথে একজন কো-বরোয়ার অর্থাৎ সহগ্ৰহীতা হলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি প্রাথমিক গ্রহীতার( শিক্ষার্থী) দ্বারা গৃহীত লোন শোধ করার দায় স্বীকার করেন।
- শিক্ষার্থীর নামে একটি জীবন বীমা করা হবে লোনের মূল্যের ওপর নির্ধারণ করে।যেটি শিক্ষার্থীর দ্বারা বহন করা হবে এবং বীমার প্রিমিয়াম প্রদান করা লোনের পরিমাণ থেকে কেটে নেওয়া হবে।
- শিক্ষার্থী এবং সহগ্রহীতা ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করবেন।
- ব্যাংকগুলি অভিভাবক / আইনী অভিভাবকদের সহ দায়বদ্ধতা ব্যতীত স্পষ্ট / অদৃশ্য আকারে কোনও সুরক্ষা / সমান্তরাল সুরক্ষার জন্য জোর দেবে না ।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের অর্থ কীভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছাবে
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্স ফি ও অন্যান্য ফি লোনের পরিমাণ থেকে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে।
- কম্পিউটার/ ল্যাপটপ/ ট্যাবলেট/ বই/খাতা/কলম/জীবনযাত্রার ব্যয় ইত্যাদি সম্পর্কিত মূল্য সরাসরি শিক্ষার্থী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড থেকে পাওয়া লোনের মার্জিন মানি
- ৪ লক্ষ পর্যন্ত কোনো ডাউন পেমেন্ট করতে হবে না।
- ৪ লক্ষের অধিক আবেদনকারীদের ডাউন পেমেন্ট হিসেবে মোট লোনের ৫% আগে ব্যাংকে ডিপোজিট করতে হবে।
স্কলারশিপের মূল্য মার্জিন মানি অর্থাৎ ডাউন পেমেন্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের অর্থ পরিশোধ এবং স্থগিতাদেশ
- পড়াশোনা এবং কোর্স সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর এক বছর কোন টাকা দিতে হবে না।
- লোনের মূল্য পরিশোধ করার জন্য সর্বাধিক ১৫ বছর সময় পাওয়া যাবে।
0 Comments